আড্ডাপত্র

১২ পৌষ, ১৪৩১; ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৪;সকাল ৭:৫১

আড্ডাপত্র : প্রথম কাব্যগ্রন্থ, প্রথম কবিতা– ৪৩

প্রথম কাব্যগ্রন্থ, প্রথম কবিতা আড্ডাপত্র প্রকাশ করছে। প্রথম কাব্যগ্রন্থের সাথে কবির আনন্দ, উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি পাঠকের কানে নতুন কবিতার গুঞ্জরণ ভেসে আসে। পাঠকের মনে কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতাটি তুলে ধরতে চায় আড্ডাপত্র। কবিতা পাঠের সাথে সাথে জানবো কবি সম্পর্কেও। এই আয়োজনটি পরবর্তীতে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হবে..

ফিরে যাওয়া

বাবুল আনোয়ার

আমরা আবার ফিরে যাবো চন্দনপুরে। আমরা আবার
ফিরে পাবো ফুল ও ফসলের নন্দিত উৎসব।
পুনর্বার সেই সুবর্ণ গাঁয়ের পথ ধরে আমরা পেরিয়ে
যাবো শতাব্দীর গাঢ় অন্ধকার। জোছনার আলোয়
দেখে নেবো মুখ, তিস্তার জলে মেটাবো আজন্ম তৃষ্ণা।
সময়ের সচকিত প্রহরায় আমরা ফিরে পাবো।
বাস্তুভিটে, স্বপ্নের নীড় আবাদযোগ্য ভূমি
মাটির ভালোবাসা আমাদের লালন করবে, ভোরের সূর্য
ছড়াবে উত্তাপ, নীলকণ্ঠ পাখীরা দেবে ‘গার্ড অব অনার’
সংসার বিবাগী কবি সেদিন ফিরবেন ঘরে।
তেমনি অফুরান রৌদ্রলোকে খেলা করবে
আমাদের সন্তানেরা, কবিতার বর্ণাঢ্য পঙক্তিমালার
মতো ফিরে পাবে সোনালী শৈশব, দুধভাত সাগরকলা।
উদার উন্মুক্ত আকাশের নীলে উড়বে কিশোরের ঘুড়ি
শিউলীর গন্ধে জাগবে অবুঝ কিশোরী।
আমরা আবার ফিরে যাবো চন্দনপুরে
শিশিরের শব্দে ভেঙ্গে যাবে তেমনি রাত্রি শেষের ঘুম।

………………………………..
বাবুল আনোয়ার আশির দশকের কবি। কবিতার পাশাপাশি প্রবন্ধ, শিশুতোষ গল্প লিখে থাকেন। একসময় প্রচুর ফিচার লিখেছেন। পেশাগত জীবনের শুরুর দিকে সাংবাদিক, সাময়িকী সম্পাদনা ও কলাম লিখতেন।
জন্ম ২৬ ডিসেম্বর ১৯৬০, নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার বড়ভিটা গ্রামে। পিতা ছোবহান উদ্দিন আহমেদ ছিলেন স্কুল শিক্ষক। মা আম্বিয়া বসুনিয়া ও খোদেজা শাহ। দশ ভাইবোনের মধ্যে পিতামাতার দ্বিতীয় সন্তান তিনি।
নিজ গ্রাম বড়ভিটা হাই স্কুল থেকে ১৯৭৫ সালে মাধ্যমিক ও ১৯৭৭ সালে জলঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯৮২ সালে রংপুর কারমাইকেল কলেজ থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে অনার্স এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন।
১৯৮১ সাল থেকে জাতীয় পত্রপত্রিকায় নিয়মিতভাবে তার লেখা প্রকাশিত হয়। সে সময় থেকে দৈনিক জনতা, দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা, দৈনিক রুপালী, বার্তা সংস্থা ইউএনবি, দৈনিক মুক্তকণ্ঠ পত্রিকায় বিভিন্ন সময় সাংবাদিকতায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৮৯ সালে বিসিএস এর মাধ্যমে সাংবাদিকতা পেশা ছেড়ে তিনি শিক্ষা ক্যাডারে যোগ দেন। দীর্ঘ ত্রিশ বছর শিক্ষকতা করে ২০১৮ সালে অধ্যাপক হিসাবে সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
একজন সাংস্কৃতিক সংগঠক হিসেবেও তিনি পরিচিত। সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সড়ক’ এর প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক তিনি। এ ছাড়া তিনি জাতীয় কবিতা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তিনি দু’বার বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির সদস্য ছিলেন।
প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ : তবুও রয়েছি জেগে (১৯৯১, মিনা প্রকাশনী, ৩য় সংস্করণ ২০২০, পুথিনিলয়); জানালায় দাঁড়িয়ে নদী (২০০৮, অনন্যা, ৩য় সংস্করণ ২০২০, পুথিনিলয়); চোখ জুড়ে ভোরের আকাশ (২০১৭, পুথিনিলয়); কর্ষিত কালের আঁধার (২০২০ পুথিনিলয়); ভালোবাসার লিরিক (২০১৮, পুথিনিলয়); ভালোবাসার লিরিক -২ ( ২০১৯ , পুথিনিলয়); ভালোবাসার লিরিক – ৩ (২০২০, পুথিনিলয়)।
উপন্যাস: জোছনায় অবগাহন’ ( ২০২০, পুথিনিলয়)।
প্রবন্ধ: শিক্ষা ব্যবস্থাপনা বিষয়াদি ( ১৯৯৬, এবং প্রকাশনী, ২১ তম সংস্করণ ২০২০ , আইন প্রকাশনী)।
পুরস্কার ও সম্মাননা: লেখালেখির স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বেশ কয়েকটি সন্মাননা ও পুরস্কার লাভ করেছেন।
দেশভ্রমণ: ভারত, নেপাল, ভুটান ও শ্রীলংকা ।

Facebook Comments

আড্ডাপত্রে লাইক দিন

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১