বাল্যশিক্ষা
`লেখাপড়া করে যে
গাড়ি ঘোড়া চড়ে সে’
এই শ্লোকে সমর্পিত আমরা
বছরের পর বছর গাড়ি ঘোড়া বশ করতে প্রাণপাত
মানুষ হওয়ার চেয়ে গাড়ি হবো
ঘোড়া হবো
আমাদের মা বাবারা জানেন
এই মন্ত্রে উৎকোচ বশীভূত হবেন
এবং উপরয়ালাও
ওখানেইতো বসে আছে গাড়ি
দাঁড়িয়ে আছে ঘোড়া
কোনো হাঁকডাক ছাড়াই আকাশ থেকে ঝরে পড়বে বৃষ্টিবৈভব
দেবতারা বেড়াতে আসবেন
মহাভারত থেকে
ইলিয়াড অডিসি
রামায়ণ থেকে
বর দেবেন- দুধভাতের বদলে বারবিকিউ- শ্যাম্পেন
বস্ত্রহরণের আনন্দে নাচবে দ্রৌপদীরা
আমরা লেখাপড়া করবো
গাড়ি ঘোড়ায় চড়ে দেখা করতে যাবো -দুর্যোধন জগৎশেঠ রায়বল্লভ
মীরজাফর ঘসেটি বেগমের সাথে
আর মানুষ হবার সব পথ হারিয়ে
অনবরত গাড়ি ঘোড়া দালান কোঠার
জঙ্গলে ঢুকে পড়বো
হয়ে ওঠা
যতক্ষণ না আমাতে যুক্ত হও
প্রবহমান পদ্মা পলির উর্বর
আমি হয়ে উঠবো না
সুন্দরবন যতক্ষণ না অঙ্কুরিত হয়
আমার বাহুর দৈর্ঘ্যে
মিলিত না হয় অস্থিতে কোনো ডোরাকাটা
আক্রমণ না করে শাণিত স্বপ্নে
আমি হয়ে উঠবো না
বঙ্গোপসাগর বিলি না কাটে দৃষ্টিতে
বুনে দেয় অসীমের স্পন্দন
আমাকে ছাড়বে না বিস্মরণ
সাকা হাফং থেকে চুইয়ে না পড়ে
আকাশের চূড়া
বসন্তের বিকেল উড়ে এসে না বসে
আমার মাথায়
যতক্ষণ না প্রতিষ্ঠা পায় সবুজের প্রাণ
আমার তৃষ্ণায়
আমি হয়ে উঠবো না
দগ্ধ একিলিস
আমি তাকে চিনি
তার তারুণ্যের রৌদ্রদিন দেখেছি অনেক
অক্ষরের বীজ থেকে শস্যদানা মননভূমিতে
পুত্রের প্রতি মাধ্যাকর্ষণ কী অসীম
স্ত্রীকে দিয়েছিলো আঙুলের আশ্চর্য চিরুনি
তাকে চিনি আবেগের অগ্নিগিরি
নির্ভয় উল্কা শলাকা
সাপের সঙ্গমে গাঁথা কণ্ঠ
গল্পে ঠাসা অন্ধকার
মুখভর্তি রাজধানী
প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বিজ্ঞাপন
জীবনের নিজস্ব নদী আছে
বালি ও শামুক
প্রতিটি ঢেউয়ের বাঁকে ভাঙনের স্বর
তাকে চিনি প্রথা ছেঁড়া আগুনের পাখি
প্রবাল দুঃখ থেকে জেগে ওঠা দারুচিনি দ্বীপ
সর্বনাশ চোখে নিয়ে বসে থাকা দগ্ধ একিলিস