শরৎ এলে
♦
শরৎ এলে দোল খেয়ে যায়
সাদা কাশের বন,
তুলোর মত মেঘগুলো সব
উদাস করে মন।
শরৎ এলে শিশির ভেজা
ঘাসের ডগা হাসে
মাঠে মাঠে পাগলা হাওয়ায়
সবুজ ফসল ভাসে।
শরৎ এলে শাপলা শালুক
নদীর জলে ফোটে
দুষ্টু ছেলে সাঁতার কেটে
অমনি সেদিক ছোটে।
শরৎ এলে পাখির গানে
জুড়ায় সবার প্রাণ
আকুল করে শিউলি টগর
জুঁই চামেলির ঘ্রাণ।
শরৎ এলে জোনাক মেয়ে
ছড়ায় শুধু আলো
এই শরতে আনন্দ ঢেউ।
তাইতো লাগে ভালো।
হেমন্তর ছড়া
♦
মিষ্টি শীতের নবান্নতে
হেমন্ত তাই এলো,
সবুজ মাঠে আনন্দতে
সুখটা ফিরে এলো।
তুলোর মত সাদা সাদা
মেঘগুলো সব ভাসে,
গাছে গাছে পাগলা হাওয়ায়
শিউলি টগর হাসে।
ভোরের বেলায় ঘাসে ঘাসে
শিশির কণা ঝরে,
ধুম পড়ে যায় পিঠা-পুলির
এই বাঙালির ঘরে।
খেজুর গাছে মাটির কলস
রস পড়ে টুপ টুপ,
হেমন্তের এই শীত আমেজে
সবাই থাকে চুপ।
মাঠে মাঠে সোনালি ধান
চাষির মুখে হাসি,
হেমন্তকাল আলোর ঝলক
মুক্ত তারার রাশি।
আজব খবর শুনি
♦
ওপাড়াতে আজব খবর
তোমরা কেউ জানো?
ঘোড়া নাকি ডিম পেড়েছে
কেউ কি সেটা মানো?
কোকিল নাকি পাহারা দেয়
সারাটা রাত জেগে,
কথা শুনে সিংহ মামা
তাইতো ওঠে রেগে।
আসলো ঘোড়া দলে দলে
দেখবে এবার তারা,
এ সব খবর পাড়ায় পাড়ায়
ছড়ায় বলো কারা?
চালাক শেয়াল ছড়িয়ে খবর
দিচ্ছে সবার ধুলো,
ঘোড়া তো নয় ডিম পেড়েছে
লাল মুরগিগুলো।
কথা শুনে বনের পশু
হা হা করে হাসে,
বাঘ ভাল্লুক হরিণ হাতি
সবাই ছুটে আসে।
বাঙালীর কবি
♦
রবীন্দ্রনাথ খাঁটি বাঙালি
সন্দেহ কারো আছো?
মায়ের টানে মাটির টানে
যারা থাকে কাছে কাছে।
আকাশ নিয়ে বাতাস নিয়ে
লিখেছে হাজারো কবি,
ফুলের কথা ফলের কথা
গাছের কথা সবই।
শিশুর কথা লেখেন ছড়ায়
জল টুপ টুপ করে,
এঁকেছেন কবি কত নানা ছবি
সব কিছু মনে পড়ে।
বিশ্বের সেরা বাঙালির কবি
নোভেল পেয়েছে তাও,
তার গান শুনে মন উড়ে যায়
তুমি যদি গান গাও।
বাইশে শ্রাবণ এই বড় কবির
হঠাৎ হলো প্রয়াণ
বাঙালির মনে বিশ্ব জুড়ে
আজও কবি অম্লান।
কবি নজরুল
♦
বর্ধমানের কাজীর ঘরে
দুষ্টু ছেলে দুখু,
পাড়ায় পাড়ায় বেড়িয়ে শুধু
হারায় সময় টুকু।
ভুত-পে্ত্নী, দৈত্য-দানব
করতো না সে ভয়,
অগ্নিবীণায় জাগলো এদেশ
জাগলো জগৎময়।
তাই না দেখে স্বৈরাচারী
পাঠিয়ে দিলো জেলে
একটুও সে ভয় পায়নি
দস্যিপনা ছেলে।
শিকল পরা গানের সুরে
মুক্তি দিলো তার
মান করে সেই দুষ্টু ছেলে
কয়নি কথা আর।
অভিমানি সেই ছে্লেটা
হারিয়ে গেল দূরে
আকাশ বাতাস আজও দেখি
কাঁদছে করুন সুরে।