শয্যায় যুগল হাঁস
শয্যার পুকুরে যেন আমরা যুগল হাঁস
ডুবসাঁতারে শুধু আনন্দের গুগলি আহরণ,
তোমার পালকে পাই শ্যাওলা সুবাস
দেহ ঘিরে প্রেম রয় মখমল জলের মতন।
হাঁসেরা ঈর্ষান্বিত হতে দেখে মানবিক জলকেলি
জলশূন্য পুকুরে তোলা তুমুল আলোড়ন
পালকের ভাঁজে গোঁজা সোহাগ সকলি
জলের গহীনে রাখে গাঢ়, গূঢ় বিলোড়ন।
তোমার পায়ের শব্দ
তোমার পায়ের শব্দ মিলাতে না মিলাতেই
দেখো আরেকজন এসে গেল।
ঘরদোরের মুখ খুব ঢাকা ছিল বিষাদে
এখন আলতা পায়ে পথ উঠে এসেছে বারান্দায়।
উল্কাপাতে পুড়ে যায় গ্রহ, বিপন্ন অনেক আকাশ
আরেক বৃষ্টির শেষে প্রান্তরে বেড়ে ওঠে ঘাস।
তোমার পায়ের শব্দ মিলাতে না মিলাতেই
দেখো আরেকজন এসে গেল।
এখনো পুড়ছে আগর; বল, ফের প্রদীপ জ্বালাবো?
সমস্ত স্থির চিত্র ভাঙ্গছে
এত যে কথা বলি, কি পাই সরু?
সুচারু তোমার মুখ দেখে কী হয় সঞ্চয়?
বিস্মৃতির সুষুপ্তির শেষে কী বিস্ময় জেগে রয় তবু!
খুব মাখামাখি হয়ে গেল বলে প্রজাপতি যাবে না কি উড়ে
তার নিজস্ব ডেরায়?
ফুল ব্যথা পাবে সেতো প্রসিদ্ধ নিয়ম!
আকাশে ক’দণ্ড ভাসে রাঙানো মোষের পাল?
পরক্ষণে তাকায় সেই বর্ণহীন বিষুবীয় বিন্যাস।
বাতাসে সাজানো থাকে ধুলোস্তরের নতুন প্রলেপ।
এত যে মুখ দেখি জলে, কী রেখা আঁকা থাকে গভীরে,
ঢেউ দাও, সামান্য ঢেউ, মুছে যাবে বিম্বিত সমস্ত বাঁধন।
স্থির সমস্ত চিত্র ভাঙ্গছে মৃদুশীল জলের ব্যপনে।
প্রেমিক পতঙ্গ
ভালবাসাবাসি ছিল নিরেট পাগলামি
কোন কোন পাগলেরও মধ্য-মিল, অন্তজ্ঞান থাকে
তারাও আগুনকে তফাতে রেখে বলে, ‘হঠ যাও,’
পাখা-প্রত্যঙ্গ পুড়ে গেল তবু এই অগ্নির আলিঙ্গণ ছাড়িনি
দহন লেহনে যার, শিখাতে যার প্রলয় নাচন
তার বুকে ঝাঁপ দিয়ে রে পতঙ্গ পুড়ে হলি ছাই!
ছাই নিয়ে হয় কাব্যে মহিমা মাখানো
মহাকাব্যে দগ্ধপর্ব জোটে,
মানুষেরা ঐ ছাই তুলে রাখে বুকে!
বস্তুত পতঙ্গের প্রাণমূলে প্রেমিকই পোড়ে!
এক জীবনের চেয়ে ভারী
এত যে ভেঙ্গেছি, নুয়েছি আর মিশেছি ধুলোয়
তুমি খুব উঁচু হয়ে ছিলে?
তোমার প্রাসাদ কেশর ফোলানো দীপ্র সিংহের মতো
বরফের তাপ তুলেছিলো?
দক্ষিণ মেরুর হাওয়ায় ঝুরঝুর কবে ভেঙ্গে গেছে!
এখানে কেউ খুব দীর্ঘসময় থাকে না,
স্বল্পস্থিতির ভেতর কেন এত দুঃখ দাও
এত দীর্ঘ ভার-
যা এক জীবনে সহে না।