এক.
হৃদয়ে থেকেও পড়তে পারোনি চোখের লেখনি
বুকের ভিতর বইছে কি ঝড় দেখেও দেখনি ।
দৃষ্টির সংকেতে
না বলা কথার ব্যাকুলতা ছিল গেঁথে
চোখের সে ভাষা উৎসুক চোখে কখনো লেখোনি ।
কান্নার সুখ পেতে
এলে না, এলে না অসীমে হারিয়ে যেতে
ভালোবেসে তুমি সুখের মরণ মরতে শেখোনি ।
দুই.
ফিরিয়ে নিও না দৃষ্টি
এখানে এখন মনের আবেগ, ছেড়া ছেড়া মেঘ
যখন-তখন নামবে বৃষ্টি ।
মেঘগুলো ক্রমে ক্রমে জমে মিলনের সুখে মরবে
নিঃশ্বাস ছুঁয়ে বৃষ্টি ধারায় ঝরবে
আহা কি অমর সৃষ্টি ।
ইচ্ছেরা অনুভূতি ছুঁয়ে, সুখের দ্যুতিতে সাজবে
সমর্পণের রাগিনীতে মন বাজবে
মরণও আহা কি মিষ্টি ।
তিন.
রাত্রী নিঝুম
কে যেন/ এমন সময় সুর তুলেছে
নির্ঘুমা এই চোখে বন্ধুর
আয়রে আয় ঘুম ।
মনের বিলাপ কান্না হয়ে ঝরে
মায়াবতীর থরে থরে
কাঁপানো অধরে
এখানে/ নিরবতার নীল কপলে
পূর্নিমা চাঁদ কষ্ট নামের
এঁকে যায় চুম ।
তবে কি গো সেই শিয়রের পাশে
নিবু নিবু আশার বাতি
মরণ হয়ে আসে
যেখানে / ঘুমের পাখি প্রেমের বুকে
মায়ায় মায়ায় আনে স্বপ্নের
ফাল্গুন মৌসুম ।
চার.
ওগো প্রিয়তম
তোমার প্রিয়ার সংসারে তুমি
পিয়াসি মনের কূল
আমার/ অন্তরে তুমি
পরম পাওয়া হারিয়ে যাওয়া
প্রথম পূজার ফুল ।
বুকের গভীরে আজন্ম ধরে
যে সুর সেধেঁছি , সে সুর তোমারই দান
প্রাণের ভেতর তাই হয়ে উঠে গান
মধু বসন্তে
ষোড়শী বাতাসে মুখরিত হয়
আজো আশার মুকুল ।
নয়নের জলে চঞ্চল হয়ে
যে ছবি এঁকেছি, সে ছবি তোমারই মুখ
পারি নি মুছতে আজো কামনার সুখ
এ বড়ো পাওয়া
দু’নয়নে নয় , নিলে মনে ঠাঁই
করেছ প্রেমে ব্যাকুল ।
পাঁচ.
একুশ আমার একুশ বাংলার
বর্ণমালায় সাজানো গান
বুকের তাজা রক্তে রঞ্জিত
নির্ভীক ভাষা শহীদের দান!
এখানে / চেতনার রং হয়ে হাসে
নবীনের স্বপ্ন চিরকাল
উদিত সূর্য অন্ধকারে
প্রতিবাদী আলোক মশাল
সেই সে টানে রক্তিম হয়ে
বাংলার দামাল দিয়েছে প্রাণ!
এখানে / বিরহের দাগ চঞ্চল হয়ে
বিপ্লবের গায় জয়ধ্বনি
মরণ জেনে পেতে দেয় বুক
বাংলা মায়ের চোখের মণি
সেই সে ত্যাগে ফেব্রুয়ারি
সবুজ বাংলায় চির অম্লান!
ছয়.
দেহের মরণ হইলে ওরে
দেখে সর্বলোকে
মনের মরণ হইলে পরে
কেউ দেখে না চোখে
পোড়া অন্তর একলা পোড়ে
কান্দে না কেউ শোকে ।
ভুলের ঝড়ে ভাঙলে একবার
বিশ্বাসের ঘর
দোষের আগুন পোড়ায় সবই
আপন হয় পর
নিঠুর দহন থাকে শুধুই
আগুনের আলোকে ।
সরল মনে লাগলে কাদা
কলংক রয়
নিন্দার কাঁটা বুকে নিয়ে
জীবন হয় ক্ষয়
ভাঙলে বিশ্বাস মনের মরণ
হয়রে এক পলকে ।
সাত.
চোখে চোখ পড়তেই
কি যেন কি হয়ে গেল
তুমি/ চলে গেলে
আমি ফিরে এসে দেখি
অজান্তে সেখানেই
হৃদয়টা রয়ে গেল!!
সেই থেকে শুরু হলো
বিশ্বাস বুকে নিয়ে চলা
সেই থেকে শুরু হলো
নিজেকে পুড়িয়ে নিজে জ্বলা
ওই মূখ ভেবে ভেবে
জ্বালাটাও সয়ে গেল ।
মিলনের আশা নদী
সুগভীর হলো প্রাণ কেঁটে
সারা বেলা কেটে গেল
তুমিময় বাগিচাতে হেঁটে
দৃষ্টির জানালায়
শিহরণ বয়ে গেল ।
আট.
তোমার ছোঁয়ায় অনুভূতির তৃষিত চোখ
সুখের জলে উঠেছিল ভিজে
বুঝেছে মন দৃষ্টি দিয়ে ছোঁয়ার মূল্য কীযে ।
হৃদয় ছুঁয়ে ছিলে বলে
আবেগের মেঘ স্মৃতির চিহ্ন এঁকে ছিল
গলে গলে
সমর্পণের ভাঁজে ভাঁজে ধরা দিয়ে নিজে ।
তোমার পদ ধূলি পেয়ে
ব্যাকুলতার জ্যোৎস্না গলে ভেতর বাহির
গেল ছেয়ে
জীবন্ত প্রেম আজই প্রথম খুঁজে পেয়েছি যে ।
নয়.
মুজিব নামে, শোন একটি
গল্প শোন
কানের পাশে সেই সে ধ্বনি
বাজে এখনো
একটি / মুখের ডাকে
কোটি জনতা হাত বাড়ালো
মরণ ভয় দু’পায়ে ঠেলে
এক সারিতে এসে দাঁড়ালো ।
মাঠের চির সবুজ থেকে
সূর্য রাগে গাঁথা সেই সে কথা
শপথ করো, অস্ত্র ধরো
ছিনিয়ে নিতে অমর স্বাধীনতা
দেশের টানে বীর যোদ্ধা
হাসি মুখেতে প্রাণ হারালো
একটি/ মুখের ডাকে
কোটি জনতা হাত বাড়ালো ।
ন্যায়ের পথে লড়তে গিয়ে
জাগল প্রাণে ঐক্যের চেতনা
শোষণ ফাঁদ ভেঙ্গে দিয়ে
সেদিন থেকে শুরু স্বপ্নবোনা
প্রতিবাদের শ্লোগান দিতে
লাখো কন্ঠ হলো ধারালো
একটি/ মুখের ডাকে
কোটি জনতা হাত বাড়ালো ।
দশ.
মাঝে মাঝে আমি ভাষাহীন হয়ে যাই
স্মৃতির গভীরে নিজেকে হারিয়ে
অজান্তে শুধু তুমিময় রয়ে যাই ।
এসেছিলে তুমি কোন এক ভোরে
সুখে কেঁদে ছিলো মুগ্ধ দুচোখ
হঠাৎ পাওয়া স্বপ্নের ঘোরে
যুগ যুগ ধরে এভাবেই আমি
নদীর মতন তোমাতেই বয়ে যাই ।
বেঁধেছিলে তুমি ভালোলাগা দিয়ে
সেই থেকে মন, রাগে-অনুরাগে
বেঁচে আছে শুধু তোমাকে জড়িয়ে
বিরহ আঘাতে মৃত্যু ছুঁয়েও
তোমার গহীন ধারাতেই ক্ষয়ে যাই ।