ছবির বিয়ে উপাখ্যান
তুমি যখন একটি দুষ্টু বালকের ছবি আঁকছিলে,
তখন আমি একটি মিষ্টি বালিকার ছবি আঁকছিলাম।
সমুদ্র তীরের রুদ্র ঝলমল বালির মতো মুখচ্ছবি,
রঙিন ফিতায় বাঁধা ছোট্ট দু’টি বেণী।
স্পষ্ট চোখের তারা।
লালাভ মায়ার ঔষ্ঠ্যদ্বয়,
স্বরবৃত্তের মতো কম্পমান।
দুটো ছবিই আঁকা হলো,
রাখা হলো পাশাপাশি
ছবির বিয়ে দিলাম ভেবে
ভীষণ হাসাহাসি।
তীরে তীরে শৈশবেরা হাতছানি দেয় রোজ,
নদীর স্রোতে ভেসে চলি,
সাঁতার জানি নে।
কোন কূলে যে হারিয়ে গেল বাল্য প্রেমের নীড়।
ক্লান্ত আমি খুব!
তবু দিগ্বিদিক ছুটে যাই স্মৃতির উদ্যানে।
খোঁজে বেড়াই ছবির বিয়ে উপাখ্যান।
ঝরাপাতার গল্প
মৎস্য কন্যার মতো টকটকে সদ্য কথা বলা
টিয়ে পাখিটি বর্ণের ঝর্ণাতে সাঁতার কাটে।
ঐ তো নদী, নদীর পাড়ে বৃক্ষের সমারোহ!
সেখানে অনেক পাতা,
পাতার বুকে আঁকা রঙ-ছবি, শব্দ-পঙক্তি,
অক্ষর গাণিতিক বিন্যাস।
চঞ্চলা পাখিটি ডানা মেলে সাঁতার কাটে,
আর তীরে এসে পাতা কুড়ায়।
তার আনন্দ পৃথিবী বৈচিত্র্যময়!
সুর-সৌরভে ভরপুর জল-শব্দের রাজ্য!
একদিন ঝড়ো হাওয়া পিঠে নিয়ে চঞ্চুঅলা মুকুট বায়সের আগমন ঘটে।
সানাই বাজে কচিমুখে ঘোমটা পরে।
সানাইয়ের শব্দে পাতাগুলো মলিন হয়ে ওঠে,
বিদ্যাঞ্জলিকে ভাঁজ করে রাখা হয় পুরনো তাকে।
মৎস্য কন্যার মতো টকটকে কথা বলা ভুলে যায় টিয়ে,
ঝড়-ঝাপটায় ভেঙে যায় ডানা,
রূঢ় সময় সন্ধ্যা ডেকে আনে।
চোখের নিচে কালো দাগ জাগে, নদীর চরের মত।
একদিন শোনা যায় পাখিটি ঘুমিয়ে পড়েছে,
গঞ্জনা স্রোতে ডুবতে ডুবতে অক্সিজেনের অভাবে।
সাঙ্গ হলো অস্রোপাচার!
বুনো ঘাসে আবৃত মাটির ঢিবি,
সেখানে পাতা ঝরে,
পাতায় পাতায় লেখা থাকে ঝরাপাতার গল্প!