প্রথম কাব্যগ্রন্থ, প্রথম কবিতা আড্ডাপত্র প্রকাশ করছে। প্রথম কাব্যগ্রন্থের সাথে কবির আনন্দ, উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি পাঠকের কানে নতুন কবিতার গুঞ্জরণ ভেসে আসে। পাঠকের মনে কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতাটি তুলে ধরতে চায় আড্ডাপত্র। কবিতা পাঠের সাথে সাথে জানবো কবি সম্পর্কেও। এই আয়োজনটি পরবর্তীতে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হবে..
এসো মিলি শিল্পের প্রস্তাবনায়
শামসেত তাবরেজী
একটি মুহূর্তের উন্মোচন নারী
পারবে কি দিতে
আজ এই ব্যক্তিদীর্ণ সভ্যতার শীতে,
ক্ষয়িত চাঁদের নিচে সম্ভব হবে নাকি
একটি আলিঙ্গন
নেশা ধরা তুমুল ইচ্ছায়, নিরুৎসাহী স্তন
একবার জাগাতে পারো যদি
ঘোর মগ্নতায়–
হোক না সে নগরীর আণবিক পরা-জ্যোৎস্নায়
পৃথিবীতে উদ্যমের ব্যথা জানি
ফুরোবার নয়
তবু যদি একদিন একটি মুহূর্তের বিস্ময়
আমাদের কম্প্র্রমান ঠোঁটে
অভিজ্ঞান বসন্তের প্রবর্তনায় ফোটে,
প্রেতচ্ছায়া পারবে না নিতে
আমাদের প্রজ্বলিত শরীরের শিখা,
ব্যক্তিবিশ্ব ভুলে যাবে
ইতিহাসে থাকবে না লিখা।
তবু আজ এসো নারী
এসো আজ স্তব্ধতায় মিলি দু’জনায়
পরস্পর পরস্পরে শিল্পের প্রস্তাবনায়।
শামসেত তাবরেজী আশির দশকের কবি।চিত্রশিল্পী হিসেবেও তিনি খ্যাতিমান। জন্ম ১৯৬১ সালের ৫ এপ্রিল, ঢাকায়। বাবার বদলির চাকরির সুবাদে থেকেছেন দেশের বিভিন্ন স্থানে। সেই কারণে তাঁকে পড়াশোনাও করতে হয়েছে বেশ কয়েকটি স্কুলে। বিজ্ঞানে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন টাঙ্গাইল সরকারি মাওলানা মোহাম্মদ আলী কলেজ থেকে। এরপর বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে পড়াশোনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।
লেখালেখির শুরু ক্লাশ ফোর-এ পড়বার সময়।প্রথম লেখা প্রকাশিত হয় তদানিন্তন ‘মুকুলের মহফিল’-এ। প্রথম কাব্যগ্রন্থ থেকে থেকে শেষ কাব্যগ্রন্থ পর্যন্ত কবিতায় তিনি নিজস্ব স্টাইল দাঁড়া করাতে সক্ষম হয়েছেন। তাই তাঁর স্বকালের অন্যকবিদের চেয়ে তাঁকে সহজে আলাদা করা যায়।
প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই ‘উদ্বাস্তু চিরকুট’, বের হয় ১৯৯২ সালে। তারপর; আবাগাবা, আম্রকাননে মাভৈ কলের গান; হে অনেক ভাতের হোটেল; অবিরাম অরেঞ্জ; মুহূর্তমা (২০১২); তক্তা (২০১৩); দুজনেষূ; অশ্রু মোবারক (২০১৫); রওজার দিকে (২০১৬); সহজ শোভাদি বাংলা কবিতা (২০১৮); পিয়া পিয়া বলে ডাকি (২০১৯); বসা ভাতের ভৈঁরো (২০২০)।