আড্ডাপত্র : প্রথম কাব্যগ্রন্থ, প্রথম কবিতা– ৮
[প্রথম কাব্যগ্রন্থ, প্রথম কবিতা আড্ডাপত্র প্রকাশ করছে। প্রথম কাব্যগ্রন্থের সাথে কবির আনন্দ, উচ্ছ্বাসের পাশাপাশি পাঠকের কানে নতুন কবিতার গুঞ্জরণ ভেসে আসে। পাঠকের মনে কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থের প্রথম কবিতাটি তুলে ধরতে চায় আড্ডাপত্র। কবিতা পাঠের সাথে সাথে জানবো কবি সম্পর্কেও। এই আয়োজনটি পরবর্তীতে গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হবে]
সত্তা
জরিনা আখতার
আমি আর কোনো জেলের জালেই পড়ব না ধরা
ওদের যতই সুদৃঢ় জাল
আমার ততই পিছল শরীর।
এই উত্তাল জল আমার রূপালী আবাস
শরীরের সাথে মিশে আছে;
আঁষটে গন্ধে উথলে ওঠে সত্তার সুরভিত উচ্ছ্বাস।
তীরের জেলের লোভী হাত ছোঁড়ে জাল,
কিন্তু আমিতো আর নই রুগ্ন ভগ্ন মৃতপ্রায়
যে ঝোলের বাটিতে টুকরো টুকরো পরাধীনতা মেনে নেব!
আমার শক্তির কাছে পরাভূত ঐ জাল—
এই জল আমার।
=================
[কবি জরিনা আখতার ১৫ মে ১৯৫১ সালে ঢাকা জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। মোহাম্মদ আব্দুল লতিফ ও খুরশীদা খাতুন এর প্রথম সন্তান তিনি। স্বামী: মরহুম দেওয়ান মোহাম্মদ আবেদ। তিনি কামরুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয় থেকে ১৯৬৬ সালে মাধ্যমিক ও গভর্নমেন্ট ইন্টারমিডিয়েট গার্লস কলেজ থেকে ১৯৬৮ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। ইডেন কলেজ থেকে বাংলায় স্নাতক ও একই বিষয়ে ১৯৭৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। পড়াশোনা শেষ করার পর ১৯৭৭ সালে লালমাটিয়া মহিলা মহাবিদ্যালয়ে শিক্ষকতা জীবন শুরু করেন এবং ২০১১ সালে বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকার মিরপুরে বসবাস করছেন।
ষাট দশকের মাঝামাঝি স্কুলে পড়াকালীন সময়ে লেখালেখি শুরু করেন এবং ১৯৬৪ সালে ‘নবাবগঞ্জ সাময়িকী’তে ‘আগামী দিনের নাগরিক’ নামক কবিতা প্রকাশ পায়।তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা সাত। তার মধ্যে কাব্যগ্রন্থ পাঁচটি। কালো ময়ূরের ডাক- ১৯৮৬; পঞ্চশর (যৌথ- ১৯৮৭); এই ছুরিই আরশি-১৯৮৯; সেগুন মেহগনি ও অন্যান্য কবিতা- ১৯৯৩; এই আমি নিজস্ব আমি- ২০০২; জলের আরশিতে নির্নিমেষ চেয়ে থাকা একটি হিজল গাছ- ২০১৭। প্রবন্ধ- প্রসঙ্গ: সাহিত্য ও জীবন- ২০০৪।
লেখালেখির স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি ১৯৯৮ সালে জীবনানন্দ দাশ স্মৃতি সাহিত্য পুরস্কার (পশ্চিমবঙ্গ, ভারত) লাভ করেন।]