বৃক্ষের দৃষ্টিবিভ্রাট
কতদিন পাঠ করি না ভোরের রোদ।
পত্রগুচ্ছ দুলিয়ে ডাকছে ওকডাল,
কাছে যেতে চুপ।
চোখের কোটরে অন্ধকূপ।
অপথালমোলজিস্ট জানায় দূরের চোখ ঠিক আছে,
কাছের দৃষ্টিতে তৈরি হয়েছে বিভ্রাট।
চশমাটা পড়ে সে চুমুক দেয় আমার চোখের রোদে।
হলিসউড, নিউইয়র্ক। ১১ ডিসেম্বর ২০২০।
টেলিফোন
জল কাদা ভেঙে যে উঁচুতে এসে দাঁড়ালাম
সেখানে তিনটি রাস্তা,
সাপুড়ের ঝাঁপি থেকে নেমে গেছে তিনদিকে।
জানি না গন্তব্য কোনোটির,
শুধু জানি এদের একটি নির্জনতা ভেঙে ভেঙে
আমাকে আলোর কাছে নিয়ে যাবে;
যদিও প্রগাঢ় অন্ধকারে নেই আপত্তি, ছিল না কোনো কালে।
অপেক্ষাকৃত দূর্গম রাস্তায়
পা বাড়াতেই পাতারা সশব্দে বেজে ওঠে অকস্মাৎ,
যা লেখা ছিল না স্ক্রিপ্টে।
আমি কান পাতি বৃক্ষের বিশাল কাণ্ডে, গাছের খোড়লে;
টেলিফোনের ওপাশে প্রমত্ত ঝড়ের কণ্ঠ।
ভয়াবহ দিনের গোপন সংবাদ দেয় সে আমাকে।
বৃক্ষশাখা থেকে হ্যাচকা-টানে টেলিফোনের রিসিভার তুলে নিই,
মুহূর্তে ঝুলিয়ে দিই শূন্যে, বাতাসের কানে;
সমস্ত অরণ্য নিভে যায় লজ্জাবতী পাতার স্বভাবে,
নিভে যায় এক অশুভ শব্দের কম্পন-সন্ত্রাসে।
এলিপন্ড পার্ক, নিউইয়র্ক। ৫ ডিসেম্বর ২০২০।
বনসাই
ইচ্ছে করে ভোরের রোদে নরোম কাদা হই
আমার বুকে ঘাসের ডগা বাতাসে হইচই।
ইচ্ছে করে রোদের রেণু সারা অঙ্গে মাখি
ধুলোর নিচে, ঘাসের কাছে একটু আরো থাকি।
বৃক্ষ থেকে হলুদ পাতা নৃত্য করে নামে
এই পাতাটি পড়লো গিয়ে দূরের কোনো গ্রামে।
ইচ্ছে করে এখন আমি সে-দূর গ্রামে যাই
এই শহরে আমি তো এক
কাচের ঘরে সাজিয়ে রাখা বিনিদ্র বনসাই।
হলিসউড, নিউইয়র্ক। ১ ডিসেম্বর ২০২০।