ও কাহা টাউনো যাবা নাহি? মলুয়ার পালা বলে জমছে বেজায়
হুনবার মুন চায়।
যুদিল যাবার চাও ডাক দিও; কাইলকা হাইঞ্জালা
গরম চাদ্দর নিও, কান পেইছা বাইন্দো কইলাম; নরম মাফলার
বেসুম্বাব হিঁয়াল পড়ে গো, পত্ দেহা যায় না নিয়রে
জারে শইল কাঁফে যে হুলহুলি।
আইতভর হুনো যুদি বিচ্ছেদের কিসসা মলুয়ার
নয়ন ভরবো আঁসুজলে, মুন কাইন্দা হবো জারেজার!
কাহা গো, তুমারে কই হুনো, যহন বন্দের ফিরে
খাঁ খাঁ করে আগুনের পুন্নিমার চান, বামুঞ্জির বুহের পানিত্
জুসনা ফিনকি দিলে কামাখ্যার জলপরি একলা আইট্টা যায়Ñ
আওলা বাতাসে দুলে কালিজিরা ধানের বাস্না
জানি না কিয়েরে ম্যান্ আৎকা কাইন্দা উঠে আমারও পরান।
একলা খেতার তলে উম নাই, গুম নাই, কাকপক্ষী বেবাকে গুমায়
আমি চইক্ষে দেহি যে আন্ধাইর, আমার উঠান দিয়া,
না না, য্যান্ ঠিক আমার বুহোত্
বিলাইয়ের পায়অ আঠে হারা আইত মলুয়া সুন্দরী
আমারে দরসে বুজি কামরূপ-কামাখ্যার পরি!
এহন কি অবো কাহা, কও না কী করি!
অইসি বেদম পেরেশান
আমারই মুন খালি করে আনচান!
[কবিতাটি দক্ষিণ জামালপুরের ভাষায় লেখা। কাহা> কাকা, ভাইস্তা>ভাতিজা, গেতাছে> যাচ্ছে, হুনবার>শুনতে, মুন>মন, যুদিল>যদি, কাইলকা>কাল, হাইঞ্জালা>সাঁঝের সময়=সন্ধে বেলা, চাদ্দর>চাদর, পেইছা>পেঁচিয়ে, বাইন্দো>বেঁধো, বেসুম্বাব>অসম্ভব, হিঁয়াল>শীত, ঠান্ডা, পত্>পথ, নিয়র>কুয়াশা, হুলহুলি>ঠকঠক, বন্দের ফিরে>ধানের মাঠের দিকে, আ’গুনের>অগ্রহায়নের, বামুঞ্জি>একটি বিখ্যাত বিলের নাম, বুহের>বুকের, ফিনকি>ফিনিক, আইট্টা>হেঁটে, বাস্না>সুবাস=সুঘ্রাণ, কিয়েরে ম্যান্>কী জন্যে যেন, আৎকা>হঠাৎ=অকস্মাৎ, কাইন্দা>কেঁদে, বুহোত্>বুকে, খেতার তলে>কাঁথার নিচে, উম>ওম , গুম>ঘুম, পায়অ>পায়ে, আঠে>হাঁটে, হারা আইত>সারা রাত, অইসি>হয়েছি।]