শরতের বিমুগ্ধ ভায়োলিন
∆
মন খোলা শরৎ হতে উড়ছে সাদা কাশের ঘুড়ি
নিবেদিত বিকেল লাল হয়ে আছে কুমারী লজ্জার আক্রোশে
ক্রমে ঢলে পড়ছে মায়া দিঘির জলে, এবার আগুন-স্নানে
ভেসে যাক বেদনার স্থাবর-অস্থাবর, চেরাগ জ্বলা আশার এ বুকে
জগদ্দল ঘোড়ার আড়াই পা; তুলে নাও শনি, তুলে নাও…
আশ্বিনের চাঁদমুখি সোনার পার্বণে এসো, আমরাও
প্রজাপতি হই, উড়ি; ঐ তো চাঁদ সন্ধ্যার বৃহস্পতি
উড়ছে উলুধ্বনি লগন…
ঘরে ফেরা
∆
এই সমুদ্র লবণের আত্মবিনাশ
এই চোখে তোমার প্রস্থান শুধু সীমানা প্রাচীর
ভাঙতে চাই দেহচিত্রের নৈব্যর্ক্তিক বাঁক
কাঁচিকাটা পায়ে প্রতিদিন অতিক্রম করছি
ভুলের পঙক্তি, সন্ধ্যায় রেখেছি ঘর দেখা এক
বেদনার মতো সারসের গলা
সময়ের অস্তে ফুটছে সন্ধ্যারেখা, ডাকছে ঘরে ফেরা
মৌরিতা
∆
বাজতে থাকে কলিংবেল মৌরিতা মৌরিতা
রাত জাগা পেরেকে চোখ আর আশ্বিনের চাঁদ
আকাশে কাশের মুখস্ত শরৎ
মৌরিতা, তোমার জন্য সবটুকু সুন্দর
নিজ হাতে রোপন করেছি মিনা করা স্বর্ণাভ বিকেলে,
আমার যে ঘর অন্ধের মতো আদর চিনে
সেখানে রেখেছি রাত ভরা তারার কলরব
দুঃখের নদী ক‚লহীন, তবু বেছে নিয়েছি মাঝি জীবন
কয়েদমুক্ত ইচ্ছেয় চলছে নৌকা, মৌরিতার আগুনে
বেগমগঞ্জ জ্বলে উঠো
∆
নদীতে চল নেই, জলে স্রোত নেই
তবু ঢেউয়ে ঢেউয়ে ভেসে যায় বেগমগঞ্জ
বিবস্ত্র হয় বেগমগঞ্জ, হেরে যায় বেগমগঞ্জ
এই যে নদী, নদীতে বিসর্জন করে তীব্র নীল
চোখ গলা রক্ত জলের উর্বর বেদনা
আর আমাদের স্মৃতিকোষে ক্রমশ জমা হয়
ধর্ষনের সিরিজ, চারদিকে লুন্ঠিত শাড়ি
ছেঁড়া ব্রা, পেটিকোট-মা এবার প্রতিবাদ হোক
নদী আর বরফে আগুন জ্বলুক
আগুণ জ্বলুক…
কথা
∆
উঠোনে বেজে উঠে শালিকের কিচিরমিচির কলিংবেল
ছিঁড়ে যায় তিমিরবন্ধনী রাত, ভাঙে ঘুম
ঘুমে কথার সাথে কথা হলো কথার সংসারে
আর এইসব কথা গ্রন্থিত করে রাখে জীবনের অলৌকিক ডায়রি
সময় নেই, যেতে হবে কথার ভুবনে,
কথা ফেরি করে গঞ্জের হাট, ঘাটে ঘাটে করি তাই খেয়ার পাঠ
কথা মানে প্রেম, কথা গান
কথায় কথায় হোক ভোর মোরগের আজান।