বোনফুল
ফুলগুলো আমার সন্তানতুল্য ছোটবোন
বোনের ঘ্রাণে, গৌরবে ধানক্ষেত দীর্ঘজীবী হয়ে উঠছে
হ্রাস পাচ্ছে বাবার দীর্ঘশ্বাস এবং শ্বাসকষ্ট।
নকশি কাঁথার মতো পূর্ণ হচ্ছে মায়ের মোনাজাত আর শাদা ভাত!
আমাদের ভাতের স্বপ্ন সত্যি হচ্ছে,
হাড়িতে নেচে নেচে ফুটছে চালভাত।
নুন, কেরোসিন, কাপড় ছাড়া
আমরা আর কিছুই কিনবো না।
পেছনে ফেরার পথটা খুঁজে পেলেই ফিরে যাবো ভিটেবাড়ি।
হিমেল
এক হেমন্তে হঠাৎ করে ভোর বেলাটাই সন্ধে
মোংলা-সাভার উঠলো জেগে মৃত্যুফুলের গন্ধে!
অসমাপ্ত। চলে গেলো হিমঘরে সে, হিমেল-
আর কখনো কেউ পাবো না ফোন কিংবা তার জিমেইল।
অস্থিরতা শোক নীরবে একটি কলম কাঁদছে?
মায়ের কাছে, ভাইয়ের কাছে সে আনন্দে যাচ্ছে!
নভেম্বর ২২, ২০২০
‘তোমাকে অভিবাদন, প্রিয়তমা’
প্রত্যাবর্তণের আনন্দে আরো দুই বার চিয়ার্স
আয়নার ভেতরে থেকে মেয়েটির সাথে।
আয়না থেকে বেরিয়ে এসে
সে নিজেকে খুঁজে অথবা যমজ জননী।
‘আবার আসিব ফিরে’; ফিরে আসার উৎসবে
রেপলিকার সাথে, প্রতিবিম্বের সাথে
অথবা নিজের সাথেই গড়ে তুলে আত্মীয়তা।
জড়, যন্ত্র আবেগে আন্দোলিত
স্বাগত জানায় কারখানার চিৎকার,
এবং আবারো একসাথে, মৃত্যুর সাথে বসবাস।
মৃতনদী
শহরটি মারা যাচ্ছে।
মৃতব্য শহরের জন্য একটি সকাল কাঁদছে,
কাঁদছে গাছ, নিমগাছ।
কান্নার জন্য অনুমতি চেয়ে আবেদন করেছিলো পাখিরা
আদালত তখন শীতকালীন নিদ্রায় কুনো ব্যাঙ।
ব্যাঙদেরও অভিযোগ ছিলো মাদ্রাসার বিরুদ্ধে-
সব অভিযোগ একদিন মিশে যাবে নদীর খরস্রোতে।
শহরের পর আমরাও একদিন মৃত নদী হয়ে যাবো,
সেদিন মাছেরা অথবা অন্য কেউ কান্নার আবেদন করবে-
তখনও মহামান্য আদালত ( )…।
ক্রস ফায়ারের শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেলে
পাখিরা এবং একটি সন্ধ্যা আবারও কেঁদে উঠবে।
টরন্টো নভেম্বর ৫, ২০২০
লজ্জা
‘মুখ দেখাতে লজ্জা করে’
তাই পড়ে রই শয্যা, ঘরে
আজ মানুষের নাকটি কাটা,
নাক ঢাকে তাই মাক্সে সাটা।
রক্তের দাগ কি সবার হাতে?
হাত মিলায় না কারো সাথে!
ফুরিয়ে গেছে মূল্যবোধ,
প্রকৃতির আজ প্রতিশোধ!