দীর্ঘ ভ্রমণ, যেতে থাকে দূর
বাতাস বহে, স্পন্দনে দুলে মন
তার শিহরণে ছুটে চলে
মানুষ;
দীর্ঘ ভ্রমণ, যেতে থাকে দূর
স্বপ্নবৃক্ষের ভেতর – অজস্র স্বপ্ন
আভা খুলে বসে আছে – বিস্ময়!
এই ঘোর জীবনের দিকে মুখ
নিকটে হাজারও ক্ষুধা
ভাসমান অক্ষরে – কুহকের দাহ
মিলনের চোখে বহু অমিল
এপথে- ওপথে আদি শুরু হলেও
অন্তের কিন্নর একাকী পার করে – ঘননিশীথ!
ছায়া
কেন এতো স্বাদ জাগে
তার তরে
মন নির্মাণে বুঝি এসো
তবে কেন জলের উচ্ছ্বাসে এসো না?
মন পাখি ছুটে, মন আঁখি খোঁজে
স্বপ্নে শহরে নেশা দোলে
আনন্দ কেবল ঘর ছেড়ে – দূরে
দাহ নীলে অগ্নি অগ্নি খেলা
অলক্ষ্যে ছায়া ঘুরে….
কামনার চুম্বন ঝড় তুলে – গভীরে
কাকে জড়াই
জীবন বধির বলে – শুনেছি সেই ঘাসফুলে
ফোটে না ফুল!
বসন্তে তামাক ধোঁয়া ওড়ে যায়
পুড়ে নিদ্রা
অঘুম চোখ বেলুন ফুলে
ঝুঁকে পড়ে মধুমুখ
কামনার চম্বুন ঝড় তুলে – ভেতরে!
উল্কার মত জন্মের টান জ্বলে ওঠে
পুরো শ্বাসে
বেদনার বহ্নিপুঞ্জে ভাসমান প্রাণ
সন্ত্রাস খেলে গোপনে – একান্ত আপনে।
শুধুই যেতে থাকে
জীবন ছেড়ে যাবে
এটি তার ধরণ
তবে বড্ড মায়া হয়- পেছনের টানে!
এই ঘর
সে চির সত্য পর
তবু থেকে যাওয়ার চরম ইচ্ছা
মাটি কুঁড়ে লুকিয়ে রাখার মত
সে –
সেখান থেকেও আস্তে সরে যায়
শুধুই যেতে থাকে….
এক লহমা আলোর গহীনে
কফিন ঝুলে রেখে
হেঁটে যাচ্ছে বৈরাগ পা
মাঝে মাঝে এসে দুলিয়ে যায় – মাটির শরীর!
সে চলে গেলে ডানা দু’খানা পাখা মেলে
পাখির ঠোঁটে বাঁধে ঘর
এক লহমা আয়ুর গহীনে ভিন্ন ভিন্ন দৃশ্য চোখ খুলে
দেখে যায় – কুজন!
এক চিলতে লটকে থাকা কপাল রেখা
বারেবারে বিলাপ করে – জীবন জীয়নে
বদলের এ খেলা
কার দায়ে থেমে যাবে – নতুন স্নায়ুর গা!
অসুখ আসে খুব গোপনে
অসুখ আসে মনে, আসে শরীরেও
জল শাঁখে ভেসে বেড়ায়
খুব গোপনে
খুব ক্ষয়ে ক্ষয়ে
কারণ- অকারণে আসে ভেতরে!
কিছু বলা যায়, কিছু বলা যায় না
পুরো তান পুড়ে গেলেও
সন্ধ্যার ঠোঁটের মত লুকাতে লুকাতে
বুনে নিতে জীবন-
জীবনের নিয়মও
এই বিদ্ধ কেবল নিজের, তৃষ্ণা জাগলেও
অর্ধেক খেতে হয়
অর্ধেক ছাড়তে হয় – এই মহা পথে
বাঁচতে গেলে রাত্রি মাড়িয়ে
দিনের শহরতলিতে পেরেক ফুটে ফুটে
হেঁটে যেতে হয়-জীবন সঞ্চয়ে!
চোখের প্রণয়
ফেলে যাচ্ছি জীবন
তার অ – দূরে কার মুখ যেন ডাকছে?
এই সাড়া না পারার ভাসান চোখ
একাকী,
ভেতর সঙ্গে জল ঢালছে কার পানে?
অথচ
মুখ ও চোখ কেউ কাউকে ছুঁতে পারে না
কেবল তারা বনের নিচে – সংসার পাতে দুজন!
শুয়ে থাকে মুখোমুখি, পাতার ফাঁকে
খেলে যায় – প্রণয়!
এখন সময় তিন যুগ
এইপথে – সুগোপন – তুমি- আমি
এক মহাবিস্ময়!
সময় কেবল ছুটছে, আর গহীনে ডুবে আছো
সেই কিশোরবেলার ছন্দে
ইচ্ছে করে খুব, অধরে বলে উঠি
তুমি – আমিতে যে আনন্দ
নয়নে – নয়নে গতের ডাক আকুল করে।
ফের যদি দেখা মিলে যায়,
রুমালে এঁকে দিব
জীবন আধুলিটা অচল নয়
এখন সময় তিন যুগ- হাসিতে হাসিতে
ভরপুর গল্প সম্মুখে শত মঞ্জরী ছড়ানো যাবে!
স্যাটেলাইট তারে বলে ওঠে
বিবর্ণ দুপুর কাব্যে
সর্ষ ক্ষেতের আইল জুড়ে ডানা বিছিয়ে
বিজন সুরে ডেকে যাচ্ছে একদল সোনালি পাখি
চোখেমুখে অচেনা বৈতরণী নদীর স্রোত পাল
খুঁজে বেড়াচ্ছে ছুটে চলা উচ্ছ্বল মুখ।
জীবনের হাওয়া বিয়োগে
অন্ধকার সুড়ঙ্গে চিতাবাঘের জ্বালাময়ী চিৎকার
কালো শালের ফাঁকে ভোরের আলো
দেখতে না পারার কষ্টের ডুগডুগি
চুপি চুপি নগরীরেখার কোল ঘেঁষে
চেনা মুখ দেখার তুরঙ্গম
পা বাড়ায় খাঁ খাঁ রোদ্দুর মাঠে!
কালের সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে দমের ফুরসত
ঝিমিয়ে ঝিমিয়ে জলাঞ্জলি দেয়
জীবন গণনাহীন বিনাশে
বাঁচার আলো স্তিমিত হলে
স্যাটেলাইট তারে বলে ওঠে – জীবন শেষ !
কেউ কেউ হাতে ধরে বলে
চলো, আবার জীবন সাজায়, আলোর প্রদীপ জ্বালায়।
এভাবে সাদা বাটির জীবন
সে যখন ছাড়ে – বেশ টান লাগে
ভেতরকার মাজা ধরে
ইচ্ছে করে- মাঝ খোলে ঢেউ কাটি
আরও… আরও
অনেককাল!
সুখের ডালে ফুল ফোঁটা শয্যা
কেশর রঙে উল্লাস করে- জলের গতি
আষ্টেপৃষ্ঠে মুখের লালা ঝরে – আমাদের যৌবনে!
এভাবে সাদা বাটির জীবন
গোয়াল ঘরের নিচে কাটে – জল- কাদা শব্দে
নরম কদমের বহরে শুনতে পাই
পেছনে টান
ফেলার আসার টান
বুড়ি হওয়ার টান…